শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ ঢাকা, বাংলাদেশ
সংবাদ

ঢাকার আতিথেয়তায় মুগ্ধ মোদি

ঢাকার আতিথেয়তায় মুগ্ধ মোদি

দ্বিতীয়বার ঢাকার আতিথেয়তা গ্রহণ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

>> বাংলাদেশ খুব অতিথিপরায়ণ- এটা সবারই জানা। বিদেশি যেকোনো অতিথি এলেই তাদের যে আতিথেয়তা দেখানো হয়, সেটা তারা বরাবরই প্রকাশ করে যান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাংলাদেশের জনগণের আতিথেয়তা ও আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে তার বক্তব্যের মাধ্যমেই।

দুদিনের সফর শেষে ঢাকা ত্যাগ করার আগে শনিবার (২৭ মার্চ) রাত সাড়ে আটটার পর বাংলাদেশ সফর নিয়ে টানা একাধিক টুইট করে এই মুগ্ধতা প্রকাশ করেন বিশ্বের সবচেয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

বাংলায় লেখা এক টুইটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‌‘আমার সফরকালে বাংলাদেশের জনগণ যে আন্তরিকতা দেখিয়েছে তার জন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই।’

অপর এক টুইটে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমরা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা এবং সামনে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি।’

আরেক  টুইটে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ, বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও অন্যান্য বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এগুলো আমাদের উন্নয়ন অংশীদারিত্বে শক্তি জোগাবে এবং দুই দেশের মানুষের বিশেষ করে তরুণদের লাভবান করবে।’

এর আগে শুক্রবার (২৬ মার্) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক অটুট থাকবে। এই দুদেশের সম্পর্কের কোনো ফাটল ধরবে না। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক মজবুত। আর বাংলাদেশকে কোনো শক্তি দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমি আনন্দিত যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে তার সক্ষমতা প্রদর্শন করছে। যারা বাংলাদেশ গঠনে আপত্তি করেছিলেন, যারা এখানকার মানুষকে নীচু চোখে দেখতেন, যারা বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে সন্দিহান ছিলেন, বাংলাদেশ তাদের ভুল প্রমাণ করেছে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে তিনি শান্তির বার্তা ছড়িয়েছেন। এ কারণে ভারত সরকার বঙ্গবন্ধুকে এ বছর গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে।’

নরেন্দ্র মোদির টুইট এবং বক্তব্যে তার উচ্ছ্বাসই প্রকাশ পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশে এবং ভারতের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে দেখেন সেটাই জানিয়েছেন। তিনি যে বাংলাদেশের আন্তরিকতায় মুগ্ধ সেটাই বারবার বলতে চেয়েছেন।

উদযাপন অনুষ্ঠানে মুজিব কোট পরে উপস্থিত হন নরেন্দ্র মোদি। তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে ঢাকায় আসেন নরেন্দ্র মোদি। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  বিমানবন্দরে নরেন্দ্র মোদিকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।

১০ দিনের অনুষ্ঠানমালায় যোগদানকারী বিশ্বনেতাদের মধ্যে নরেন্দ্র মোদি হচ্ছেন পঞ্চম রাষ্ট্রীয় অতিথি। বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর নরেন্দ্র মোদির এটাই প্রথম বিদেশ সফর।

বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দুই প্রধানমন্ত্রী বিমানবন্দরে অস্থায়ী মঞ্চে দাঁড়িয়ে সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। রাষ্ট্রীয় অতিথি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন। পরে দুই প্রধানমন্ত্রী একে অপরকে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন।

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতার পর নরেন্দ্র মোদি পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যান। সেখানে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

এ সময় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করে। বিউগলে বাজানো হয় করুণ সুর। এরপর তিনি স্মৃতিসৌধে রক্ষিত শোকবইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এরপর স্মৃতিসৌধের আঙিনায় একটি অর্জুন গাছের চারা রোপণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এর আগে ১৯৯৯ সালে সফরে এসে ওই একই প্রাঙ্গণে একটি গন্ধরাজ ফুলের চারা রোপণ করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। এক টুইটে দুটি গাছের ছবি টুইট করে এ তথ্য জানান নরেন্দ্র মোদি।

এরপর, নরেন্দ্র মোদি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যান।

এরপর দুপুরে হোটেল প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ১৪ দলীয় জোটের নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে একই স্থানে মোদির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির এক প্রতিনিধিদল।

সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৭ মার্চ) সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী সাতক্ষীরার শ্যামনগরের ঈশ্বরীপুরে অবস্থিত যশোরেশ্বরী দেবী মন্দির পরিদর্শন করেন। এরপর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ পরিদর্শন এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় ওড়াকান্দি মন্দির পরিদর্শন করেন। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের মন্দিরে পূজা দেন তিনি। এ সময় এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন তিনি।

একই দিন বিকেলে, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন। একই সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। পাশাপাশি ভার্চুয়ালি যৌথভাবে বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। 

নরেন্দ্র মোদির শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকা ত্যাগের কথা থাকলেও রাত সাড়ে ৯টায় রওনা হন তিনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সারা দিনের টানা কর্মসূচির কারণে সময়ে একটু হেরফের হওয়ায় বিলম্বে ঢাকা ছাড়েন তিনি। 

দৈনিক প্রতিনিধি/আরআরসি/২৮ মার্চ ২০২১

এই কুইজে


- জন
অংশগ্রহণ করেছেন
আপনিও রেজিষ্ট্রেশন করুন


the leader

the leader

২ এপ্রিল ২০২৩

আজ আপনার জন্য আর কোন পরীক্ষা নেই!

শিরোনাম:
   ডিএমপির নতুন কমিশনার, অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর        জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে আর্থিক ব্যবস্থার পুনর্গঠন চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা        প্রতিদিনই আমরা খবরে দেখছি পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বেশি।        উন্নয়ন ও সুশাসনের প্রতীক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা        দেশে ১০ বছরের প্রাকৃতিক গ্যাস মজুত আছে : জানালেন প্রতিমন্ত্রী        মার্কিন ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠি প্রত্যাহারের দাবি ১৯২ মার্কিন বাংলাদেশির        লাঙ্গল কার জানা যাবে রবিবার        আজকে বাংলাদেশে দরিদ্রতা নাই হয়ে গেছে: চুমকি        আরো আটশত মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ আসেছে দেশে : আশাবাদ সরকারের।        আড়াই হাজার দোকান পুড়ে ছাই, ক্ষতি ২০০০ কোটি টাকা        বৈশ্বিক মন্দা সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছিঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা        স্বল্পোন্নত দেশগুলো দান চায় না, তারা তাদের প্রাপ্য চায়ঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা        স্বায়ত্তশাসনসহ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তির ছয়টি দাবি : শেখ মুজিবুর রহমান।        মার্চের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাতিকে স্বাধীনতার প্রস্তুত জন্য করেন        বাংলাদেশ গেমসের সমাপনী দিনের মূল আকর্ষণ ছিল ১০০ মিটার স্প্রিন্ট।